StudyWithGenius

HS Bengali Suggestion 2023 –রূপনারানের কূলে(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)কবিতা প্রশ্ন উত্তর – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৩ - HS Last Minute Suggestion Bengali 2023

HS Bengali Suggestion 2023

HS Bengali Suggestion 2023 – HS Last Minute Suggestion Bengali 2023 : 2023 bengali suggestion, samrat exclusive bengali suggestions hs, samrat exclusive bengali suggestions hs 2023, উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা বড় প্রশ্ন উত্তর 2023, উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা ছোট প্রশ্ন উত্তর 2023, class 12 bengali suggestion 2023 pdf download education suggestion 2023 class 12, samrat exclusive suggestion book 2023 pdf, hs bengali suggestion 2022 mcq, bengali suggestion 2023 hs, 2023 hs bengali suggestion, 2023 hs suggestion, bengali hs suggestion 2022, bengali hs suggestion 2023, h.s bengali suggestion 2023, hs bengali rachana suggestion 2023, hs bengali suggestion 2023, hs bengali suggestion 2023 abta, hs bengali suggestion 2023 abta test paper, hs bengali suggestion 2023 answer, hs bengali suggestion 2023 answer key, hs bengali suggestion 2023 bengali medium, hs bengali suggestion 2023 bengali suggestion, hs bengali suggestion 2023 class 12, hs bengali suggestion 2023 english, hs bengali suggestion 2023 english suggestion, hs bengali suggestion 2023 february, hs bengali suggestion 2023 final exam, hs bengali suggestion 2023 for hs, hs bengali suggestion 2023 hs suggestion, hs bengali suggestion 2023 kolkata, hs bengali suggestion 2023 pdf, hs bengali suggestion 2023 pdf download, hs bengali suggestion 2023 question answer, hs bengali suggestion 2023 test paper, hs bengali suggestion 2023 mcq, hs bengali suggestion 2023 mcq queston, hs bengali suggestion 2023 chapter wise,  

HS Bengali Suggestion 2023 –রূপনারানের কূলে(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)কবিতা প্রশ্ন উত্তর

পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার অধ্যায় ভিত্তিক (রূপনারানের কূলে-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) সাজেশন নিম্নে দেওয়া হল। এখানে উল্লিখিত অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বহুবিকল্পভিত্তিক, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (MCQ, Very Short, Short,  Descriptive Question and Answer) গুলি দেওয়া হল। এই প্রশ্ন এবং উত্তর  গুলি 2023 সালের উচ্চ মাধ্যমিক  বাংলা পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। তোমরা যারা উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা বিষয়ের জন্য জন্য সাজেশন খুঁজে চলেছো, তারা নিম্নে দেওয়া প্রশ্ন এবং উত্তর গুলি ভালো করে পড়তে পারো।

HS Bengali Suggestion 2023 –রূপনারানের কূলে (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) প্রশ্ন উত্তর – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৩ - MCQ প্রশ্নোত্তর [ মান ১ ]

  1. ‘রূপনারানের কূলে’ কবিতার উৎস – 
    (ক) আরোগ্য
    (খ) পুনশ্চ
    (গ) জন্মদিনে
    (ঘ) শেষ লেখা
    উত্তর – (ঘ) শেষ লেখা
  2. ‘রূপনারান’ হল –
    (ক) একটি নদী
    (খ) সাগর 
    (গ) রূপময় জগৎ 
    (ঘ) স্বপ্নের জগৎ
    উত্তর – (গ) রূপময় জগৎ 
  3. “রক্তের অক্ষরে দেখিলাম ।”- “রক্তের অক্ষর’ হল – 
    (ক) ক্ষতবিক্ষত হৃদয়ের উপলব্ধি 
    (খ) রক্ত দিয়ে তৈরি অক্ষর
    (গ) লাল বর্ণের অক্ষর
    (ঘ) গোধূলির আলো
    উত্তর – (ক) ক্ষতবিক্ষত হৃদয়ের উপলব্ধি 
  4. “চিনিলাম আপনারে”— কবি কীভাবে নিজেকে চিনেছেন ? 
    (ক) দুঃখে-শোকে 
    (খ) সুখে আনন্দে
    (গ) বেদনায়-আঘাতে
    (ঘ) আঘাতে-আঘাতে বেদনায় – বেদনায়
    উত্তর – (ঘ) আঘাতে-আঘাতে বেদনায় – বেদনায়
  5. “সত্য যে কঠিন” — কারণ —
    (ক) সত্য সাধনালব্ধ 
    (খ) সত্য অধরা
    (গ) সত্য বলে কিছু নেই
    (ঘ) মৃত্যুর মধ্যে সত্যের অবস্থান
    উত্তর – (ক) সত্য সাধনালব্ধ 
  6. সকল দেনা শোধ করে দিতে হবে –
    (ক) টাকা দিয়ে 
    (খ) মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে
    (গ) বেঁচে থাকার মাধ্যমে 
    (ঘ) মৃত্যুর কাছে আত্মসমর্পণ করে
    উত্তর – (খ) মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে
  7. “সে কখনো করে না বঞ্চনা।” — ‘সে’ হল —
    (ক) সত্য 
    (খ) মৃত্যু 
    (গ) আঘাত
    (ঘ) বেদনা
    উত্তর – (ক) সত্য 
  8. ‘রূপনারানের কূলে’— কবিতাটি রচিত হয় — 
    (ক) ১৩ মে, ১৯৪১ 
    (খ) ১৮ মে, ১৯৪১ 
    (গ) ৬ জুলাই, ১৯৪১ 
    (ঘ) ২৮ জুন, ১৯৪১
    উত্তর – (ক) ১৩ মে, ১৯৪১ 
  9. কবির মনে হয়েছে এ জগৎ – 
    (ক) রূপময় 
    (খ) বিষাদময় 
    (গ) স্বপ্ন নয় 
    (ঘ) অলীক
    উত্তর – (গ) স্বপ্ন নয় 
  10. “সে কখনো করে না বঞ্চনা।” — কারণ — 
    (ক) সে দয়ালু   
    (খ) সে বঞ্চনা বোঝে না 
    (গ) সে জগতের কর্তা
    (ঘ) সে দুঃখ-বেদনার অতীত
    উত্তর – (ঘ) সে দুঃখ-বেদনার অতীত
  11. কবির কাছে সত্যের স্বরূপ হল —  
    (ক) রহস্যময়  
    (খ) কঠিন  
    (গ) দুর্বোধ্য  
    (ঘ) কাল্পনিক
    উত্তর – (খ) কঠিন  
  12. “সকল দেনা শোধ করে দিতে হবে” – ‘দেনা’ বলতে বোঝানো হয়েছে  ? 
    (ক) বেঁচে থাকার যন্ত্রণা 
    (খ) জগতের ঋণ 
    (গ) জগতের পাওনা
    (ঘ) সমাজের প্রতি কর্তব্য 
    উত্তর – (ক) বেঁচে থাকার যন্ত্রণা 
  13. ‘রূপনারানের কূলে’ কবিতাটি কাব্যগ্রন্থের কত সংখ্যক কবিতা ? 
    (ক) ১০ সংখ্যক
    (খ) ৯ সংখ্যক
    (গ) ১১ সংখ্যক 
    (ঘ) ১২ সংখ্যক
    উত্তর – (গ) ১১ সংখ্যক 
  14. “রূপনারানের কূলে/ জেগে উঠিলাম/জানিলাম…।”— চেতনার উন্মেষে তাঁর উপলব্ধি হল – 
    (ক) মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো
    (খ) আমি মৃত্যুর চেয়ে বড়ো পাপ   
    (গ) এ জগৎ স্বপ্ন নয়
    (ঘ) আমি পৃথিবীর কবি
    উত্তর – (গ) এ জগৎ স্বপ্ন নয়
  15. ‘রূপনারানের কূলে জেগে ওঠার অর্থ —  
    (ক) ঘুম থেকে জেগে ওঠা 
    (খ) অচৈতন্য থেকে চৈতন্য ফিরে পাওয়া 
    (গ) মোহভঙ্গ হওয়া 
    (ঘ) জীবনবোধে প্রাজ্ঞ হয়ে ওঠা
    উত্তর – (ঘ) জীবনবোধে প্রাজ্ঞ হয়ে ওঠা
  16. কঠিন সত্যকেই শেষপর্যন্ত ভালোবাসলেন রবীন্দ্রনাথ, কারণ –
    (ক) বাহিরে কুটিল হোক অন্তরে সে ঋজু
    (খ) তিনি সত্যদ্রষ্টা ঋষিকবি, তাই
    (গ) সত্য কঠিন বলেই তা কখনও বঞ্চনা করে না
    (ঘ) তাকে না ভালোবেসে উপায় নেই
    উত্তর – (গ) সত্য কঠিন বলেই তা কখনও বঞ্চনা করে না
  17. কবির মতে এই জীবন হল — 
    (ক) শুধু দুঃখ ভোগ করার জন্য 
    (খ) শুধু সুখ ভোগ করার জন্য
    (গ) দুঃখের তপস্যা করার জন্য 
    (ঘ) দুঃখকে অতিক্রম করার জন্য
    উত্তর – (গ) দুঃখের তপস্যা করার জন্য 
  18. জীবনের দেনা শোধ করবেন কবি – 
    (ক) মৃত্যুর মধ্য দিয়ে 
    (খ) জন্মের মধ্য দিয়ে সত্যকে
    (গ) অস্বীকারের মধ্য দিয়ে 
    (ঘ) জীবন উপলব্ধির মধ্য দিয়ে
    উত্তর – (ক) মৃত্যুর মধ্য দিয়ে 
  19. ‘রূপনারানের কূলে’ কবিতাটির মূল কাব্যগ্রন্থ হল –
    (ক) সেঁজুতি 
    (খ) আরোগ্য 
    (গ) শেষ লেখা
    (ঘ) রোগশয্যায়
    উত্তর – (গ) শেষ লেখা

HS Bengali Suggestion 2023 –রূপনারানের কূলে(কবিতা)প্রশ্ন উত্তর – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৩ – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর [মান ১]

1.“রূপনারানের কূলে জেগে উঠিলাম”—জেগে ওঠার অর্থ কী?
Answer:জেগে ওঠা বলতে আত্মোপলব্ধির পথ ধরে জগৎ ও জীবন সম্পর্কে নবতর ধারণাকেই বোঝানো হয়েছে |

2.“সে কখনো করে না বঞ্চনা”– এখানে ‘সে’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে?

Answer : ‘শেষলেখা’ কাব্যের অন্তর্গত ‘রূপনারানের কূলে’ নামাঙ্কিত কবিতায় ‘সে’ বলতে ‘কঠিনের কথা বলা হয়েছে।

3.“সত্য যে কঠিন”– কবি ‘সত্য’কে ‘কঠিন’ বলেছেন কেন ?

Answer : কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সত্যকে উপলব্ধি করেছেন কঠিন আঘাত ও চরম বেদনার মধ্যে দিয়ে। তাই যে জীবন সাধারণ কল্পনায় আসে, যে জীবন রোমান্টিক স্বপ্ন বিলাসের, সেই জীবনকে প্রত্যাশা করেননি কবি। তাই সত্যকে তিনি খুঁজেছেন কঠিনের মধ্যে।

4.“রক্তের অক্ষরে দেখিলাম”—‘রক্তের অক্ষরে’ কথাটির অর্থ কী?
Answer: ব্যক্তিগত জীবনে রবীন্দ্রনাথ নানা আঘাতে বেদনায় জর্জরিত হয়েছিলেন। ‘রক্তের অক্ষরে বলতে কবির ক্ষতবিক্ষত হৃদয়ের উপলব্ধিকেই বোঝানো হয়েছে |

5.“সত্যের দারুণ মূল্য” বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?

Answer : মৃত্যুপথযাত্রী কবি জগৎকে সত্য হিসেবে দেখেছেন। দুঃখের তপস্যায় তিনি নিজেকে চিনেছেন। সত্যের সাধনা যে কত কঠিন এবং তার জন্যে কতখানি ত্যাগ করতে হয় সেই উপলব্ধিকে ব্যক্ত করতে গিয়ে উদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন কবি।

6.“চিনিলাম আপনারে”—কবি কীভাবে নিজেকে চিনেছেন?
Answer: কবি আঘাতে বেদনায় জর্জরিত হয়ে নিজেকে চিনেছেন |

7.“রক্তের অক্ষরে দেখিলাম।” “রক্তের অক্ষরে’ কবি কী দেখেছিলেন ?

Answer : কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘রক্তের অক্ষরে’ দেখেছিলেন তার আত্মরুপ তথাৎ ‘আপনার রূপ’ দেখেছিলেন রক্তের অক্ষরে।

8.“চিনিলাম আপনারে” – কবি আপনাকে কীভাবে চিনেছিলেন?

Answer : কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন, তিনি আঘাতের মধ্যে দিয়ে, বেদনার মধ্যে দিয়ে নিজের স্বরূপকে চিনতে পেরেছিলেন।

9.“কঠিনেরে ভালোবাসিলাম”–কঠিনকে কবি ভালোবেসেছেন কেন?
Answer: সত্য হল কঠিন। কঠিন হলেও সে কখনও মানুষকে বঞ্ছনা করে না। তাই কবি কঠিনকেই ভালোবেসেছেন |
10.সত্যের দারুণ মূল্য লাভ করার জন্য কবি কী করতে চেয়েছেন?
Answer: সত্যের দারুণ মূল্য লাভ করার জন্য কবি মৃত্যুতে জীবনের সব ঋণ শোধ করে দিতে চেয়েছেন।
11.“কঠিনেরে ভালোবাসিলাম”—কবি কেন কঠিনকে ভালোবাসলেন ?
Answer: “রূপনারানের কূলে’ কবিতায় কবি ‘কঠিন’-কে ভালোবাসলেন কারণ কঠিনই হল সত্যের স্বরূপ এবং সে কখনও কাউকে বঞ্ছনা করে না |
12.‘রূপনারানের কূলে’ কবিতায় কবি কাকে ভালোবেসেছেন?
Answer:কবি সত্যরূপ কঠিনকে ভালোবেসেছেন।
13.‘রক্তের অক্ষর’ কী?
Answer: আঘাতে বেদনায় জর্জরিত হয়ে জগৎ ও জীবন সম্পর্কে সম্যক উপলব্ধির পথকেই কবি ‘রক্তের অক্ষর’ বলেছেন।
14.‘রূপনারানের কূলে’ কবিতাটি কোন্ কাব্যের অন্তর্ভুক্ত?
Answer: ‘রূপনারানের কূলে’ কবিতাটি ‘শেষ লেখা’ কাব্যের অন্তর্ভুক্ত।
15.‘রূপনারানের কূলে’ কবিতাটির প্রেক্ষাপট জানা যায় কোন্ বই থেকে?
Answer:‘রূপনারানের কূলে’ কবিতাটির প্রেক্ষাপট জানা যায় রাণীচন্দের ‘আলাপচারী রবীন্দ্রনাথ” বই থেকে।
16.‘সে কখনো করে না বর্ণনা।”—–কে, কাকে বঞ্ছনা করে না?
Answer: সত্য কখনও মানুষকে বর্ণনা করে না।
17.’রূপনারান’ কি ?
Answer:রূপনারান হলো রূপময় জগৎ।
18.‘সত্যের দারুণ মূল্য’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
Answer:রবীন্দ্রনাথ ব্যক্তিগত মানসিক সংকট থেকে সত্যের মূল্যনির্ধারণ করেননি বরং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পট ও প্রেক্ষিতে সমস্ত মানুষের মুক্তির প্রয়াস অনুসন্ধান করেছেন। তিনি মনে করেন সত্যকে লাভ করতে হলে মৃত্যুর মধ্য দিয়ে জীবনের সকল দেনা পরিশোধ করে যেতে হয়। অর্থাৎ, সত্যকে লাভ করতে হয় ‘দুঃখের তপস্যা’-র মধ্য দিয়ে।

19.“রূপনারানের কূলে জেগে উঠলাম।” কে রূপনারানের কূলে জেগে উঠেছিলেন ?

Answer : কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রূপনারানের কূলে জেগে উঠেছিলেন।

20.“আমৃত্যু দুঃখের তপস্যা এ জীবন।” জীবন’-কে দুঃখের তপস্যা’ বলা হয়েছে কেন?

Answer : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জানতেন, জীবনে দুঃখের আধার রাত্রি বার বার ঘনিয়ে আসে। কোনো এক অদৃশ্য নাগপাশে আমরা বাঁধা পড়ে থাকি। ফলে আমাদের শান্তি বিঘ্নিত হয়। এজন্যে কবি জীবন’কে ‘দুঃখের তপস্যা’ বলেছেন।

21.“জানিলাম এ জগৎ স্বপ্ন নয়” কীভাবে কবি একথা জেনেছিলেন?

Answer : কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘রূপনারানের কূলে’ যখন জেগে উঠেছিলেন, অর্থাৎ তিনি যখন মানবসংসারে জেগে উঠেছিলেন, তখনই জেনেছিলেন এ জগৎ স্বপ্ন নয়।

22.কবি কোন সত্যকে ভালোবেসেছিলেন?

Answer : সে সত্য রূঢ় বাস্তব, যাকে মানুষ মেনে নিতে বাধ্য কবি একথা উপলব্ধি করে সেই সত্যকেই ভালোবেসেছিলেন।

23.সত্য প্রকাশের ক্ষেত্রে কবির বক্তব্য কী?

Answer : সত্য প্রকাশের ক্ষেত্রে কবির বক্তব্য – সত্য অপ্রকাশিত থাকে না।

24.রূপনারানের কূলে কবিতায় মৃত্যুতে সকল দেনা’ কীভাবে শোধ করা সম্ভব বলে কবি মনে করেছিলেন?

Answer : জীবনের পদে পদে বিচিত্র দুঃখ-বেদনার আঘাতে আঘাতে কঠিন সত্যকে স্বীকার করে মৃত্যুকে বরণ করলেই জীবনের ঋণ শোধ করা সম্ভব।

25.“রূপনারানের কূলে/জেগে উঠিলাম”—এই কথাটির মধ্য দিয়ে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
Answer:মানব ও প্রকৃতির প্রতি যে অনন্ত তৃস্না, মর্ত্যমানবের প্রতি নুগভীর দরদ কবি প্রাণে জাগ্রত তারই হিসাব মেলাতে তিনি জীবনের প্রবহমান স্রোতে সন্তরণ করে প্রতীকি রূপনারানের কূলে উত্তীর্ণ হয়েছেন। বিশ্বপথিক রবীন্দ্রনাথ আসলে জীবনসমুদ্রে ডুব দিয়ে যে অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ হয়েছেন তা অত্যন্ত কঠিন ও রূঢ় বাস্তবতায় পূর্ণ।
26.‘রক্তের অক্ষরে দেখিলাম আপনার রূপ’— সে রূপটি কেমন?
Answer:দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের রণদামামায় মানুষ মারার হোলি খেলায় একদল মানুষ মত্ত। একক মানুষ হিসেবে নয় সমগ্র মানুষের প্রতিনিধি রূপে কবি সভ্যতার এই স্বরূপটি চিনতে পেরেছেন।
27.কবি নিজেকে চিনলেন কীভাবে?
Answer:জীবনসায়াহ্নে পৌঁছে অভিজ্ঞতার কষ্টিপাথরে নিজেকে যাচাই করেছেন কবি। মানবসভ্যতার ধ্বংসকারী সত্তার সঙ্গে যুঝে নিজের অবস্থান ঠিক করতে গিয়ে আত্মানুসন্ধানের স্থলে সত্যানুসন্ধান করেছেন কবি।
28.“সত্য যে কঠিন”– কথার অর্থ কী?
Answer:কবির মনে প্রত্যয় জন্মেছে জীবনের সংগ্রামই হল সত্য সাপেক্ষ ত্যাগ ও তিতিক্ষা। স্বভাবতই সত্য এখানে কঠিন রূপে প্রতিভাত হয়।

HS Bengali Suggestion 2023 – রূপনারানের কূলে(কবিতা)প্রশ্ন উত্তর – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৩ – রচনাধর্মী বড়ো প্রশ্নোত্তর [মান ৫]

1.‘সত্য যে কঠিন’– এই উপলব্ধিতে কবি কীভাবে উপনীত হলেন, তা ‘রূপনারানের কূলে’ কবিতা অবলম্বনে লেখো।

অথবা,

“সত্য যে কঠিন/কঠিনেরে ভালোবাসিলাম/ সে কখনও করে না বনা।”—কবি কোন্ কঠিন সত্যের কথা বলেছেন এবং তা কীভাবে উপলব্ধ হয়?

Answer. রবীন্দ্রজীবনে নানান চড়াই উতরাই, জীবনের অস্তিমে ধ্যান সমাহিত শাস্ত রূপের অন্তরালে যে তরঙ্গপ্রবাহ তা দেশ তথা বিশ্বমানবের উপলব্ধ সত্য আহরণ ও হৃদয়ঙ্গমের মধ্যে গ্রথিত। সুদীর্ঘ আশি বছরের জীবনের শেষে যে উত্তরণ ঘটেছে, তা তাঁর সমস্ত জীবনবোধে সত্যাশ্রয়ী পথে আবর্তিত হয়েছে। রুদ্ধতার বিচ্ছিন্নতার বাধা পেরিয়ে সত্য উপলব্ধ হয়েছে। বাস্তব জগতের প্রতিটি ঘটনা কবিমনকে নাড়া দিয়েছে। রোমান্টিকতার বিশেষ ভাবটি অতিক্রম করে পৃথিবীর ইতিহাসের ভয়াবহ দুর্যোগ, বিশ্বময় বীভৎস ও মহাবিধ্বংসী মারণাস্ত্রের ঝনাৎকার কবিকে কঠিন ও রুঢ় বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। অপর দিকে ‘এ জন্মের তীর্থদর্শন’ রূপে রাশিয়া ভ্রমণ কবিকে সত্য ও বস্তুমুখীন জীবনবোধে উদ্দীপ্ত করেছে। সভ্যতার পিলসুজরূপী শ্রমিকশ্রেণি, অভুক্ত, অজ্ঞ জনগণই সকলের পরিচর্যা করে চলেছে আবহমানকাল ধরে। অথচ তারাই নীচে পড়ে অধস্তন হয়ে জীবন কাটাচ্ছে। সামগ্রিক বিশ্বপরিস্থিতির এরূপ অসহনীয় চাপ কবির অন্তরকে বারেবারে বিদ্ধ করেছে। মানুষের সভ্যতা ও সংস্কৃতির চূড়ান্ত সংকটময় মুহূর্তে দাঁড়িয়ে কবির অন্তরে ক্ষোভ-শঙ্কা জন্মেছে ঠিকই কিন্তু তা থেকে উত্তরণের জন্য মানুষের উপরই বিশ্বাস রেখেছেন। তাঁর বিচিত্র অভিজ্ঞতা ও কর্মপ্রচেষ্টার মধ্যে ক্ষুদ্রতা, তুচ্ছতার অভ্যাস ও সংস্কারকে অবদমিত করে বিপুল মানুষের সহযাত্রী হয়ে ওঠার প্রয়াস লক্ষ করা যায়। তাঁর জীবনের অস্তিম কবিতায় রয়েছে সেই সত্যানুসন্ধানের অনুবর্তন—

                                                                                     “সত্যেরে সে পায়

                                                                       আপন আলোক-ধৌত অন্তরে অন্তরে।”

সত্য মানবতাকে প্রতিষ্ঠা করে, মানবতা প্রতিষ্ঠার সাধনাই সত্যসাধনা। ভয় ক্ষোভ, আত্মকেন্দ্রিকতা, শোষণ-বঞ্ছনা, যুদ্ধ-বিবাদ প্রভৃতি মানবতা হননকারী বিষয় অতিক্রম করেই সত্য অর্জন করতে হয়। সেই কঠিন সাধনাতে কবি মগ্ন।

2.“চিনিলাম আপনারে / আঘাতে আঘাতে/ বেদনায় বেদনায়;”–উক্ত মস্তব্যের আলোকে রবীন্দ্রমননের দার্শনিক ভিত্তিটি আলোচনা করো।

Answer: রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি বৈচিত্র্যের মধ্যে একটা আন্তঃসাযুজ্য বর্তমান। কাব্যজীবনের শুরুতে উপনিষদিক যে আনন্দবাদের প্রকাশ, প্রথম মহাযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বিশেষ পরিণত বয়সে তা তিনি বস্তুবাদী দর্শন সঞ্জাত উপলব্ধির কবিতায় ব্যক্ত করেছেন। সে কারণে বলা যেতে পারে যে, নিয়ত পরিবর্তনশীল অথচ পূর্ণতাভিলাষী একটি জীবনের অতুলনীয় উত্তরণের নামই হল রবীন্দ্রনাথ। সেই উত্তরণ কিন্তু একদিনে ঘটেনি, অনায়াসে ঘটেনি। আজন্ম সাধন ধন কল্পনার মোহ ভেঙেই তিনি বলতে পারেন—

                                                                                  “রূপ-নারানের কূলে

                                                                                      জেগে উঠিলাম,

                                                                                     জানিলাম এ জগৎ

                                                                                           স্বপ্ন নয়।”

পারিবারিক ঐতিহ্য—দেশকাল পূর্বাপর অনুশীলনীয় অভিজ্ঞতা তাঁর জীবনসাধনার ভিত্তিকে সুদৃঢ় করে। ‘রাজর্ষি’-তে রাজা গোবিন্দ মাণিক্যের মধ্যে সেই উত্তরণের দর্শনজাত অনুভব লক্ষ করা যায়। জীবনের যা বাস্তব সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা তাকে অতিক্রম করতে গেলে অনেক ‘দুঃখের আঁধার রাত্রি’ পেরিয়ে যেতে হয়। এটা কেবল কবির ব্যক্তিক অনুভূতিই নয় বিশ্বসংসারে সমস্ত মানুষের অগ্রগতির ইতিহাসটাও তদ্রূপ। সেই ভাবনায় কবিমন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সংকটকালীন বেদনায় বলতে পারে—

                                                                          “দুঃখের আঁধার রাত্রি বারে বারে

                                                                             এসেছে আমার দ্বারে।”

প্রত্যক্ষত সেই সত্যদর্শনই রবীন্দ্রনাথকে নিজের স্বরূপ চিনতে এবং বিশ্ব-স্বরূপ বুঝতে সহায়তা করেছে। আক্রান্ত মানবসমাজকে তিনি সর্বশক্তি দিয়ে সংগ্রামে নামতে উদ্বুদ্ধ করেছেন—

“মুহূর্তে তুলিয়া শির একত্র দাঁড়াও দেখি সবে;

যার ভয়ে তুমি ভীত সে অন্যায় ভীরু তোমা চেয়ে,

যখনি জাগিবে তুমি তখনি সে পলাইবে ধেয়ে।” 

      এই দর্শনই সারাজীবন লালন করেছেন রবীন্দ্রনাথ।

3.“জানিলাম এ জগৎ / স্বপ্ন নয়।” –‘রূপনারানের কূলে’ কবিতা অবলম্বনে কবির এই ভাবনার তাৎপর্য লেখো।

কবি রবীন্দ্রনাথ আমৃত্যু জগৎ ও জীবনের বাস্তব রূপ উদ্‌ঘাটনে তৎপর থেকেছেন। তাই মানবপ্রেমিক, প্রকৃতি প্রেমিক কবি জগতের প্রকৃত সত্যের সন্ধানে রূপনারানের কূলে জেগে উঠে প্রত্যক্ষ করেছেন যে, ‘এ জগৎ স্বপ্ন নয়’। জগৎ সংসারের রূঢ় বাস্তবতা মর্ত্যপ্রেমিক কবির দৃষ্টিতে ধরা দিয়েছে। রবীন্দ্র মন ও মনন সদা সর্বদা সুদূরে স্পর্শ লাভের আকাঙ্ক্ষায় ছুটে বেড়িয়েছে। তাই ‘বলাকা’-র গতিতত্ত্ববাদেও সেই সুদূরপিয়াসি সত্তাটিই প্রকাশিত। যার ফলে তিনি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে, সমাজ ও জীবনে সভ্যতার ধ্বজাধারী উন্নতি মানুষের বোধকে কলুষিত করছে। যার বিষময় ফল হল বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা। এই পরিস্থিতি কবি হৃদয়কে দুঃখে ভারাক্রান্ত করে তুলেছে। সভ্যতার বর্বরোচিত রূপটি দেখে কবি উপলব্ধি করেছেন যে, জগৎ আপাতদৃষ্টিতে স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা মনে হলেও তার প্রকৃত রূপ ভিন্ন। স্বপ্ন তো কল্পনায় গড়া যার মধ্যে বাস্তবতার আঁচ পাওয়া সম্ভব নয়। তবে স্বপ্নের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেলেই সত্যের প্রকৃত রূপটি প্রস্ফুটিত হয়ে ওঠে। কবি রবীন্দ্রনাথ তাই আবেগবর্জিত বস্তুনিষ্ঠ জগতের স্বরূপটি উন্মোচনে প্রয়াসী হয়েছেন, যেখানে জগতের যা কিছু সত্য তা-ই গ্রহণীয়। মূলত, এই কারণেই পার্থিব জগতের বস্তুনির্ভরতার সঙ্গে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে জীবনের প্রকৃত অর্থ উপলব্ধি করে সত্তা লালিত বিশ্বাসের মোহ ভেঙে কবি বলতে পেরেছেন যে, জগতের যা কিছু তা স্বপ্নিল নয়। স্বপ্নের বেড়াজাল ছিন্ন করে সত্যের আলোকরশ্মি জগতের অবক্ষয়ী রূপটি সর্বসমক্ষে তুলে ধরে মানুষের বোধকে জাগ্রত করে।তাই কবি জীবন-নদীতে অবগাহন করে জগতের সত্যানুসন্ধানে ব্রতী হতে চান।

4.‘রূপনারানের কূলে’ কবিতাটিতে কবির যে জীবনবোধের প্রকাশ ঘটেছে তা কবিতা অবলম্বনে আলোচনা করো।

Answer: ‘রূপনারানের কূলে’ কবিতাটিতে জীবনযুদ্ধের উপাত্তে উপনীত হয়ে অবসন্ন চেতনার গোধূলি বেলায় কবির জ্ঞান ও বিশ্বাস কঠিন ও কঠোর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাস্তব জীবন সত্যের সন্ধানে ব্যাপৃত হয়েছে। আত্মিক চেতনাবোধের প্রজ্ঞায় বিশ্বলোকের বোধ সঞ্চারিত হয়েছে। তাই এটি মৃত্যুঞ্জয়ী অনস্ত জীবনবোধের কবিতা। বাস্তব চেতনাসম্পন্ন হৃদয়ে জীবনসংগ্রামে যুঝে নিজের স্বরূপকে কবি চিনতে পেরেছেন। যেখানে কল্পনাবিলাস নেই, আছে দ্বন্দ্ব-সংঘাতপূর্ণ কঠিন ও কঠোর জীবনবোধ।

সত্যের স্বরূপ সন্ধানে অত্যন্ত রূঢ় বাস্তব পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে জীবনের অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার পূর্ণ হয়েছে। জীবনের সূচনালগ্ন থেকে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্ত পর্যন্ত যে জীবন, তার নির্ণীত অব্যয়টি হল সত্যমূল্য চয়ন করা। তাই কবি উপলব্ধি করেছেন—

                                                                    “সত্যের দারুণ মূল্য লাভ করিবারে,

                                                                    মৃত্যুতে সকল দেনা শোধ করে দিতে।”

উপনিষদিক জীবনসত্য বা বস্তুবাদী জীবনধর্ম, সে যাই হোক না কেন মৃত্যুর মধ্য দিয়েও অমৃতলোকের সত্যের সুধা লাভ করা সম্ভব। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের মানুষের দুঃখবেদনার শরিক হওয়ার প্রচেষ্টায় সফল হতে আত্মানুসন্ধানের প্রয়োজন। তবে সেই আত্মানুসন্ধান কবির একার নয়, তা সর্বকালের সর্বমানুষের।

যুক্তিবুদ্ধির আলোকে প্রাপ্ত সত্য কখনও মিথ্যা হয় না। তাই কবি রূপনারানের কূলে জেগে উঠে আত্মোপলব্ধি করতে পারেন— “এ জগৎ স্বপ্ন নয়।”

আমৃত্যু দুঃখের তপস্যায় ব্যাপ্ত জীবন সেই সত্যেরই মূল্য আহরণ করে চলেছে যার তীব্রতম প্রকাশ ঘটেছে রূপনারানের কূলে’ কবিতাটিতে। তাই জীবন-তাপস কবি অবলীলায় বলেছেন—“আমৃত্যুর দুঃখের তপস্যা এ জীবন”। এই তপস্যায় সিদ্ধিলাভের মধ্য দিয়ে জীবনের প্রকৃত সত্যাসত্য বোধের জাগরণ ঘটে।

5.“সত্যের দারুণ মূল্য লাভ করিবারে,/মৃত্যুতে সকল দেনা শোধ করে দিতে।”—সত্যের দারুণ মূল্যে মৃত্যুতে সব দেনা শোধ করতে চাওয়ার অন্তর্নিহিত তাৎপর্যটি ব্যাখ্যা করো।

• জীবনের নানান সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও রবীন্দ্রনাথ পূর্ণতার আকাঙ্ক্ষা প্রত্যাশী এক মহান মানব। তিনি জন্ম থেকে মৃত্যুর সুদীর্ঘ সময়সারণি বেয়ে চলা এমন এক নাবিক যিনি জীবন সমুদ্রের সমস্ত ঘাটে ঘাটে নৌকা ভিড়িয়েছেন এবং অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে চলেছেন। রূপনারানের কূলে জেগে ওঠার মধ্যে সেই মহৎ উপলব্ধি একক জীবনের প্রত্যয় নয়, এ সমস্ত মানুষের অভিজ্ঞতা। সত্যের সুকঠিন মূল্য নির্ধারণ করতে অর্থাৎ মানব সভ্যতায় জীবনের চরমতম সত্য নিরূপণ করার জন্য ভূয়োদর্শী রবীন্দ্রনাথ মানবমুক্তির প্রশ্নটিই আরও জোরে উচ্চারণ করেছেন ‘নবজাতক’ কাব্যগ্রন্থের ‘নবজাতক’ নামক কবিতায়—

                                                                           “মানবের শিশু বারেবারে আনে

                                                                                       চির আশ্বাসবাণী,

                                                                               নূতন প্রভাতে মুক্তির আলো

                                                                                   বুঝিবা দিতেছে আনি।”

বিশ্বের শান্তিশৃঙ্খলা আর সর্বমানুষের মুক্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে একমাত্র মানুষ অথচ সেই মানবের জীবন সীমায়িত বা খণ্ডিত। খণ্ডের মধ্যে পূর্ণতার, সীমার মধ্যে অসীমের সাধনায় কবির জীবন ব্যাপৃত। কবি ব্যক্তিগত মানসিক সংকট বা আত্মিক সংকট থেকে সত্যের দারুণ মূল্য অন্বেষণ করেননি বরং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পটভূমিকায় বিশ্বমানবের মুক্তি কামনায় অধীর হয়ে মৃত্যুকালীন সময়েও সমগ্র মানুষের হয়ে কথা বলেছেন। যা কিছু শুভ ও মঙ্গলপ্রদ তার জন্য আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেছেন তিনি— “আমৃত্যুর দুঃখের তপস্যা এ জীবন”। মানুষের সভ্যতা ও সংস্কৃতির চূড়ান্ত বিপর্যয়ের দিনে কবিকে ‘প্রথম দিনের সূর্য’ ও ‘সত্তার নূতন আবির্ভাব’–এর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হয়েছে। আবার, সমস্ত পৃথিবীর জন্য অপরিসীম দরদে জীবন বিপন্ন করেও মানুষের কাছে দাঁড়ানোর তীব্র শপথ গ্রহণ করেছেন মৃত্যুর মাধ্যমে সমস্ত ঋণ পরিশোধের জন্য। দুঃখ-আঁধার কষ্ট-যন্ত্রণা এমনকি মৃত্যুভয়েও ভীত না হয়ে সত্যানুসন্ধানে প্রয়াসী হয়েছেন সমগ্র মানবসভ্যতার কল্যাণকামনা করে। 

6.‘রূপনারানের কূলে’ কবিতাটির মর্মবস্তু সম্পর্কে আলোকপাত করো।

Answer: সভ্যতার সংকট প্রত্যক্ষ করে তা থেকে মানুষকে উদ্ধার করার সাধনায় সারাজীবন ব্যাপৃত কবি আত্মিক সংগ্রাম থেকে বিশ্বমানবের সংগ্রামে নিজেকে মেলে ধরেছেন। সেই উপলব্ধির নির্যাস হল ‘শেষলেখা’ কাব্যগ্রন্থের বেশ কয়েকটি কবিতা, বিশেষ করে ‘রূপনারানের কূলে’ কবিতাটি।

জীবনসায়াহ্নে উপনীত কবি নিজের উপলব্ধ প্রজ্ঞা ও অনুভব দিয়ে বলতে পারলেন যে, সারাজীবনের চলার পথ ও মতই শ্রেষ্ঠ ও একমাত্র নয়। অভিজ্ঞতার সমুদ্রে ভাব-কল্পনা, রোমান্টিকতা তথা মানবিকতার জন্য চূড়ান্ত সংগ্রাম ও বস্তুনিষ্ঠ হিসেবনিকেশ করেই কবির আত্মোপলব্ধি—“এ জগৎ/স্বপ্ন নয়”। রূঢ় বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়ানো পৃথিবীতে জীবনসংগ্রামের জন্য কবির প্রাণে জেগেছে দরদ। বাস্তব চেতনাসম্পন্ন হৃদয়ে জীবনসংগ্রামে যুঝে নিজের স্বরূপ চিনতে পেরেছেন। সেখানে কল্পনাবিলাস নেই, আছে দ্বন্দ্ব-সংঘাত পূর্ণ কঠিন ও কঠোর জীবনবোধ। সত্যের স্বরূপ সন্ধানে অত্যন্ত রূঢ় বাস্তব পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে জীবনের অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার পূর্ণ হয়েছে। যুক্তি-বুদ্ধির আলোকে প্রাপ্ত সত্য কখনও মিথ্যা নয়। মানুষের সভ্যতা ও সংস্কৃতির চূড়ান্ত সংকট মুহূর্তে জগৎ ও জীবনের অবসানের আশঙ্কায় অসংখ্য অন্ধকার রাত্রির অভিঘাতকে আত্মস্থ করে সংকটে ও বেদনায় কঠিন সত্য রূপকে ধারণ করেছেন। জীবনের সূচনালগ্ন থেকে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্ত পর্যন্ত যে জীবন, তার নির্ণীত অব্যয়টি হল সত্যমূল্য চয়ন করা। আসলে মৃত্যুর মধ্য দিয়েও অমৃতলোকের বা সত্যের সুধা লাভ করে বোধিলাভ করার কেন্দ্রে রয়েছে একমাত্র মানুষ। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের মানুষের দুঃখবেদনার শরিক হওয়ার প্রচেষ্টাই সত্য অনুসন্ধান, যার কেন্দ্রে আত্মানুসন্ধান। সেই আত্মানুসন্ধান কবির একার নয় সর্বকালের সর্বমানুষের। সত্য ও ছলনার দ্বন্দ্বমুখর প্রেক্ষিতে মনুষ্যত্বের পূর্ণ বিকাশের জন্য মানবিক সত্য নির্ণায়ক কঠিন প্রশ্নের উত্তর কবি উপলব্ধি করেছেন। আত্মিক চেতনাবোধের প্রজ্ঞায় কবিমনে বিশ্বলোকের বোধ সঞারিত হয়েছে জীবনের শেষলগ্নেও।

7.মৃত্যুতে সকল দেনা শােধ করে দিতে । ” — পঙক্তিটির সাধারণ অর্থ কী ? কার কাছে , কার দেনা ? কীজন্য দেনা ? মৃত্যুতে তা কীভাবে শােধ হয় ?

Answer : পঙক্তিটির সাধারণ অর্থ : মৃত্যুর মাধ্যমে সকল দেনা শােধ করতে হয় । বিশ্বপ্রকৃতির কাছে নিজের দেনা ।

মানুষ বিশ্বপ্রকৃতি থেকে দুর্লভ জীবনপ্রাপ্ত হয় , যদিও সেজীবন আমৃত্যু দুঃখের তপস্যা ’ , তবুও সেজীবনে নানা উত্থানপতন বা প্রতিকূলতার মধ্যে যে সত্যকে খুঁজে পায় , সেই সত্য চরম মূল্যবান— এই সত্য লাভই হচ্ছে দেনা । 

    দেনা এই জন্য যে , বিশ্বপ্রকৃতি থেকে মানুষ মানুষজন্ম – জীবনপ্রাপ্ত হয় , ফলে এই সত্যলাভ সম্ভব। 

   মানুষই সৃষ্টিতে চূড়ান্ত । সুতরাং তার যা ধার – দেনা , তা কোনাে মানুষের কাছে শােধ দেওয়া অসম্ভব । কারণ সত্য লাভ এক নির্বস্তুক ব্যাপার , যা বাস্তবে বহুলৌকিক ঘটনার মধ্যে দিয়েই আসে । কৃতজ্ঞ মানুষ তাই জানে জীবনের আবির্ভাবে যে দেনা তা শােধ করবার একমাত্র পন্থা অনিবার্য মৃত্যুতে । বিশ্বপ্রকৃতিই যেখানে সত্য – মিথ্যার পার্থক্য নিরূপণ করে , মানুষের জীবনে সমৃদ্ধি ঘটায় , তাই সে প্রকৃতিতে স্বাভাবিক মৃত্যুর মধ্য দিয়েই শােধ হয় সমস্ত দেনা । 

8.“ রক্তের অক্ষরে দেখিলাম । আপনার রূপ , ” — বক্তা কে ? তিনি রক্তের অক্ষরে ’ কীভাবে আপনার রূপ দেখেছেন ? অথবা , “ রক্তের অক্ষরে দেখিলাম / আপনার রুপ ” — বক্তা কে ? উক্তিটিতে কবির কী ভাবনা প্রকাশ পেয়েছে ?

Answer : ‘ রূপনারানের কূলে কবিতা থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশটি – র বক্তা হলেন কবি । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । আলােচ্য উক্তিটিতে জীবন সম্পর্কে কবির প্রগাঢ় উপলদ্ধি ধরা পড়েছে । কবি জীবনের প্রান্তিক পর্যায়ে উপনীত হয়ে জ্ঞানলাভ করতে পেরেছেন যে জীবন কোনাে কাল্পনিক স্বপ্ন নয় । বাস্তব জীবন কঠিন সত্যে পরিপূর্ণ । এই বাস্তব সত্যকে উপলব্ধি করে কবি নিজের রূপকে চিনতে পেরেছেন । তিনি উপলদ্ধি করেছেন জীবন দুঃখ , বেদনা , আঘাত ও কঠিন বাস্তবতায় পূর্ণ । এই বাস্তবতা জীবনসত্য । জীবনে টানাপােড়েন , রক্তক্ষরণ , আঘাত থাকবেই । এর মধ্য দিয়েই জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে । 

   কবি ‘ আপনার রূপ ’ প্রত্যক্ষ করার জন্য কল্পনার মায়াজাল থেকে মুক্তিলাভ করে বাস্তবের কঠোর ভূমিতে পদচারণা করেছেন । জীবন সম্পর্কিত এই ভাবনায় কবির মধ্যে বিবর্তন দেখা যায় । কবি জীবনের স্বরূপকে দেখেছেন দ্বন্দ্বমুখর মানুষের আঘাত – বেদনার মধ্যে । কবির কাছে জীবন কোনাে স্বপ্নের লীলাভূমি নয় । বাস্তবের কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে সংগ্রাম করা তার কাছে জীবনের স্বরূপ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে । কবি কঠিন তপস্যার মধ্যে দিয়ে জীবনের স্বরূপকে উপলব্ধি করেছেন ।

9.“ আমৃত্যুর দুঃখের তপস্যা এ জীবন , ” — কবি জীবনকে কেন ‘ দুঃখের তপস্যা ’ বলেছেন ? এখানে কবির মনােভাব বিবর্তনের যে ছবি পাওয়া যায় , তা নিজের ভাষায় লেখাে । অথবা , “ আমৃত্যুর দুঃখের তপস্যা এ জীবন ” – উদ্ধৃতিটির মর্মার্থ বিশ্লেষণ করাে ।

Answer : কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘ রূপনারানের কূলে ‘ কবিতায় জীবনকে বিভিন্ন কারণে ‘ আমৃত্যুর তপস্যা ’ বলেছেন । কবির মতে , আঘাত – সংঘাত , পাওয়া না পাওয়ার বেদনার মধ্য দিয়েই জীবনের সত্যকে উপলব্ধি করা যায় । সত্য নির্মম , কঠিন । জীবনে । সুখ – আনন্দের মধ্যে সুখ উপলব্ধি করা যায় না । দুঃখের নির্মমতাকে উপলব্ধি করে কঠিন সাধনার মাধ্যমেই সত্যকে জানা সম্ভব হয় । কাল্পনিক ভাবনায় সত্যকে কখনােই অনুভব করা যায় না । বাস্তবের কঠিন পরিস্থিতিতে দুঃখ – কষ্টে জর্জরিত জীবনে সত্যের স্বরূপ আপনি ফুটে ওঠে । কবি জীবনের আঘাত – বেদনার ভেতরে সত্যের কঠিন স্বরূপ চিনতে পেরেছেন এবং তাকে ভালােবেসেছেন । কবির মতে , সত্য কখনাে না করে । সত্যের প্রতি কবির গভীর আকর্ষণ ও ভালােবাসার কারণে তিনি জীবনকে আমৃত্যুর দুঃখের তপস্যা বলেছেন । 

    সত্যের জীবনবােধে পৌছাতে গিয়ে কবির জীবনে বিবর্তন দেখা যায় । জীবন সম্পর্কিত ভাবনায় কবি কল্পনার মায়াজাল থেকে মুক্তি ও বাস্তবের নির্মম সত্যকে লাভ করেছেন , দেখেছেন জীবনের পরম সত্য দ্বন্দ্বমুখর মানুষের আঘাত – বেদনার মধ্যে । নিহিত আছে । জীবন তার কাছে স্বপ্নের লীলাভূমি নয় , বাস্তবের কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে সংগ্রাম করা তার কাছে জীবনের স্বরূপ হয়ে উঠেছে । তাই কবি কবিতার সূচনাতেই বলেছেন— “ রূপনারানের কূলে / জেগে উঠিলাম এ জগৎ স্বপ্ন নয় । ” 

HS Bengali Suggestion 2023 – রূপনারানের কূলে (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) কবিতা প্রশ্ন উত্তর

“HS Bengali Suggestion 2023 – রূপনারানের কূলে (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) কবিতা প্রশ্ন উত্তর” একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ টপিক উচ্চমাধ্যমিক বাংলা (Hs Bengali Suggestion, Hs Bengali Suggestion 2023, Hs Bengali Suggestion 2023 all, Hs Bengali Suggestion 2023 answers, Hs Bengali Suggestion 2023 bangla, Hs Bengali Suggestion 2023 bengali, Hs Bengali Suggestion 2023 bengali pdf, Hs Bengali Suggestion 2023 board / Hs Bengali Suggestion 2023 class 12, Hs Bengali Suggestion 2023 in bengali ) পরীক্ষায় এখান থেকে প্রশ্ন অবশ্যম্ভাবী । সে কথা মাথায় রেখে Studywithgenius.in  এর পক্ষ থেকে উচ্চমাধ্যমিক  বাংলা  পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর এবং সাজেশন  প্রদানের প্রচেষ্টা করা হলাে।

ছাত্রছাত্রী এবং পরীক্ষার্থীদের উপকারের জন্য, আমাদের প্রয়াস  উচ্চ মাধ্যমিক  বাংলা পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর এবং সাজেশন (Hs Bengali Suggestion, Hs Bengali Suggestion 2023, Hs Bengali Suggestion 2023 all, Hs Bengali Suggestion 2023 answers, Hs Bengali Suggestion 2023 bangla, Hs Bengali Suggestion 2023 bengali, Hs Bengali Suggestion 2023 bengali pdf) সফল হবে।
© studywithGenius.in

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের পােস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই আমাদের Studywithgenius.in ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। সমস্ত বিষয়ে যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলাে করুন এবং নিজেকে  তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন , ধন্যবাদ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

X